×
  • প্রকাশিত : ২০২০-১২-২২
  • ১০২৭ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক


বাংলাদেশে করোনার ভ্যাকসিন আসছে জানুয়ারিতে ৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন প্রথমে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসবে৷ আর এই টিকা দেয়া হবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে৷

বাংলাদেশের বেক্সিমকোর মাধ্যমে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সাথে যে চুক্তি করেছে তাতে পর্যায়ক্রমে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিনপাওয়া যাবে৷ আর এরজন্য ভ্যাকসিন কেনা ও বিতরণ খরচ মিলে খরচ হবে এক হাজার ৫৮৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা৷ প্রথম ডোজের ২৮ দিন পর দ্বিতীয় ডোজের হিসেবে প্রথম চালানের ৫০ লাখ ডোজ দেয়া যাবে ২৫ লাখ মানুষকে৷

ন্যাশনাল ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির চেয়ার ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘‘ভ্যাকসিন দেয়া হবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে৷ ১০ ধরনের অগ্রাধিকার তালিকা তৈরি করা হয়েছে৷ প্রথমে এই তালিকা থেকে কারা কতজন পাবেন তাও নির্ধারণ প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে৷ আমরা অচিরেই এই অগ্রাধিকার তালিকা প্রকাশ করব৷''
ভ্যাকসিন বিষয়ক কর্মসূচি পরিচালিত হবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মা, শিশু ও কিশোর স্বাস্থ্য কর্মসূচির আওতায়৷ সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির কর্মীরা এই কার্যক্রমে অংশ নেবেন৷
কারা আগে পাচ্ছেন:

যে ১০ ধরনের জনগোষ্ঠীতে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে তাদের মধ্যে আছেন: মুক্তিযোদ্ধা, করোনা মোকাবিলায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মী, সম্মুখসারির কর্মী, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাহীন জনগোষ্ঠী, বয়োজ্যেষ্ঠ জনগোষ্ঠী, দীর্ঘ মেয়াদি রোগে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী, শিক্ষা কর্মী,গণপরিবহন কর্মী৷ ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, বয়োজ্যেষ্ঠ বলতে ষাটোর্ধ বয়সের ব্যক্তিদের বোঝানো হচ্ছে৷

জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন দুই লাখ ১০ হাজার, সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন তিন লাখ, বেসরকারি কর্মী রয়েছেন সাত লাখ, স্বাস্থ্য নিয়ে বিভিন্ন এনজিও কর্মী রয়েছেন দেড় লাখ৷ গণমাধ্যম কর্মী রয়েছেন ৫০ হাজার৷ জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পাঁচ হাজার৷ পুলিশ বাহিনীর সদস্য দু'লাখের ওপরে৷ ক্যানসার, যক্ষ্মা আর ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী ধরা হয়েছে এক লাখ দুই হাজারের মতো৷ সেনাবাহিনী জন্য ধরা হয়েছে তিন লাখ৷ সংসদ সদস্যসহ জনপ্রতিনিধি ধরা হয়েছে ৭০ হাজার৷

জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য বিএসএমএমইউ-এর সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা ১০ ধরনের জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দিতে বলেছি৷ আর আমরা ওই ১০ ধরনের জনগোষ্ঠীর মধ্যে যারা করেনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে আছে তাদের জন্য বলেছি৷ যেমন চিকিৎসক অগ্রাধিকার পাবেন৷ কিন্তু যে চিকিৎসক সরাসরি চিকিৎসা কাজে যুক্ত নন তিনি পাবেন না৷ পুলিশের কথা বলেছি৷ কিন্তু যে পুলিশ সদস্য সরাসরি ফিল্ডে কাজ করেন না তিনি পাবেন না৷''

অগ্রাধিকার নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘করোনায় এখন পর্যন্ত বৃদ্ধরা বেশি মারা মারা গেছে৷ আর তারা আমাদের বাবা-চাচা৷ আবার যারা করোনার চিকৎসা করেন তারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন৷ এপর্যন্ত ১০৯ জন ডাক্তার মারা গেছেন৷ আসল কথা হলো যাদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি তাদের আগে দেয়া হবে৷''

তার মতে, ‘‘বাংলাদেশে  করোনার টিকার জন্য যে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হয়েছে, সারাবিশ্বেও একইভাবে করা হচ্ছে৷ আর এটা যাতে নিশ্চিত হয় তার জন্য নীতি হলো করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি৷'' ভ্যাকসিনের আগ্রাধিকার তালিকা ও বিতরণ পদ্ধতি নিয়ে একটি পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানান ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা৷ এই পরিকল্পনায় ভ্যাকসিন সংরক্ষণ, পরিবহন এবং বিতরণ কৌশলও রয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘এই অগ্রাধিকারভুক্ত সবাই একবারে ভ্যাকসিন পাবেন না৷ কোন পর্যায়ে কত ভ্যাকসিন আসবে তার ওপরে নির্ভর করছে কতজন পাবেন৷ তবে অগ্রাধিকারের বাইরে সাধারণ মানুষের জন্যও ভ্যাকসিন থাকবে৷ তারাও কীভাবে পাবেন তারও একটা নিয়ম করা হয়েছে৷''

ভ্যাকসিন আসার আগেই এই সবকিছু গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি৷
উৎপাদন থেকে পরিবহনসহ প্রতি ডোজের জন্য পাঁচ ডলার খরচ হবে৷ তবে এখানে আসার পর এক দশমিক ২৫ ডলার করে যোগ হবে৷ কিন্তু বাংলাদেশের নাগরিকরা বিনামূল্যে এই ভ্যাকসিন পাবেন৷


নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat