×
  • প্রকাশিত : ২০২১-০১-০৯
  • ১০১৭ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
২০ জানুয়ারির আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ক্ষমতাচ্যুতি করা না হলে পারমাণবিক হামলা চালাতে পারেন ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতার শেষ মুহূর্তে এসে পারমাণবিক হামলা চালিয়ে বসতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতারা।

এ জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে কথাও বলেছেন ডেমোক্র্যাট নেতা ও মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি।
শুক্রবার তিনি নিজ দল ডেমোক্রেটিক পার্টির সহকর্মীদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

চিঠিতে পেলোসি লিখেছেন, ‘আমাদের দেশ ও গণতন্ত্রের ওপর বিপর্যস্ত এক প্রেসিডেন্টের হামলা ঠেকিয়ে মার্কিন জনগণকে রক্ষা করতে আমাদের সবকিছুই করতে হবে।

ডেমোক্র্যাট নেতাদের লেখা চিঠিতে পেলোসি আরও বলেন, ট্রাম্প এখনই স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে, অথবা ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী কার্যকর না করলে তিনি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রস্তুত আছেন।

এদিকে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কংগ্রেসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাঁকে ফোন করেছিলেন, তিনি ফোন ধরেননি। বৃহস্পতিবার ক্যাপিটল হিলে তাঁর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে পেলোসি নিজে এই ফোনের কথা প্রকাশ করেন। এখন পর্যন্ত পেন্স পেলোসিকে ফিরতি ফোন করেননি। পত্রপত্রিকা বা টিভিতেও তাঁর উপস্থিতি নেই।

পেন্সের নীরবতার কারণ বোঝা কঠিন নয়। পেলোসি ও সিনেটের নতুন ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার যৌথভাবে আহ্বান জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় টিকে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। তাঁকে অবিলম্বে ক্ষমতাচ্যুত করে ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্সকে ক্ষমতা গ্রহণ করতে হবে।
মার্কিন শাসনতন্ত্রের ২৫তম সংশোধনী অনুসারে এই ক্ষমতা হস্তান্তর সম্ভব।
পেলোসি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখন আমরা এক অভাবিত জরুরি অবস্থার সম্মুখীন হয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহে উসকানি দেন।’ পেলোসি স্বীকার করেন, ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হাতে খুব বেশি সময় নেই, কিন্তু এই অবশিষ্ট সময়ে যেকোনো দিন ট্রাম্প ‘সর্বনাশা কাণ্ড’ ঘটাতে পারেন।
তা ঠেকাতেই ২৫তম সংশোধনী প্রয়োগের প্রশ্ন উঠেছে। পেলোসির মত, সবচেয়ে ভালো হয় যদি মাইক পেন্স নিজে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেন।

১৯৬৩ সালে আততায়ীর হাতে প্রেসিডেন্ট কেনেডির মৃত্যু হলে যে ২৫তম সংশোধনী গৃহীত হয় তাতে বলা আছে, প্রেসিডেন্ট যদি দায়িত্ব পালনে অক্ষম অথবা অযোগ্য প্রমাণিত হন, তাহলে ভাইস প্রেসিডেন্ট মন্ত্রিসভার অধিকাংশ সদস্যের অথবা কংগ্রেসের সমর্থনে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারেন। সমস্যা হলো, এই পথে এগোতে হলে প্রথম শর্ত ভাইস প্রেসিডেন্টকে দায়িত্ব গ্রহণে সম্মত হতে হবে। গত চার বছর ট্রাম্পের একান্ত অনুগত পেন্স সে কাজ করতে সম্মত নন। পেলোসির ফোনের জবাব না দেওয়ার সেটাই প্রধান কারণ।

শুধু পেলোসি বা শুমার নন, ডেমোক্রেটিক পার্টির অধিকাংশ নির্বাচিত গণপ্রতিনিধি অবিলম্বে ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে হঠাতে আগ্রহী। রিপাবলিকান পার্টির অন্তত দুজন কংগ্রেস সদস্যও একই দাবি তুলেছেন। তাঁদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন ট্রাম্প প্রশাসনের একাধিক সাবেক সদস্য।

বুধবার কংগ্রেস ভবনে ট্রাম্পের প্রত্যক্ষ উসকানিতে যে তাণ্ডব ঘটে, এঁদের চোখে তা গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ওপর সরাসরি হামলা। এরপর ক্ষমতায় টিকে থাকার সব যোগ্যতা ট্রাম্প হারিয়েছেন। এই অবস্থায় ২৫তম সংশোধনীর প্রয়োগ একটি আইনসম্মত পদক্ষেপ। জানা গেছে, চলতি মন্ত্রিসভার কেউ কেউ এই ব্যবস্থার পক্ষপাতী, এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে তাঁরা মতবিনিময় করেছেন, কিন্তু প্রকাশ্যে কোনো কথা বলেননি। পেলোসি জানিয়েছেন, মাইক পেন্স এই পদক্ষেপ গ্রহণে সমর্থন না জানালে কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে দ্বিতীয়বারের মতো অভিশংসিত করতে প্রস্তুত। ইতিমধ্যে এই অভিশংসনের খসড়াও লিখে শেষ করেছেন কোনো কোনো ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat