কোন প্রেক্ষাপটে ও কেন পলাতক আসামি বহুল আলোচিত এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারের প্রচার করা হয়েছে তার লিখিত ব্যাখ্যা দিতে একাত্তর টেলিভিশন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৭ জানুয়ারির মধ্যে তা দাখিল করতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ রবিবার এ আদেশ দিয়েছেন। এর আগে গত ৩০ ডিসেম্বর দেওয়া আদেশের প্রেক্ষাপটে একাত্তর টিভি কর্তৃপক্ষ হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারের কাছে গত ২৮ ডিসেম্বর প্রচারিত সাক্ষাৎকার ও টক শো’র ভিডিও ফুটেজ জমা দেয়। এরপর হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার তা সংশ্লিস্ট আদালতে দাখিল করেন। সিডি হাতে পাবার পর আদালত তা শোনেন। এ সময় দুদকের আইনজীবী একাত্তর টিভির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারির আবেদন জানান। এরপর আদেশ দেন। আদালতে দুদকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে। এরইমধ্যে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এ অবস্থায় গতবছর ২৮ ডিসেম্বর একাত্তর টিভি পি কে হালদারের একটি সাক্ষাতকার প্রচার করে। পরদিন ২৯ ডিসেম্বর বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। এরপর আদালত তাকে লিখিত আবেদন দিতে পরামর্শ দেন। এরপর দুর্নীতি দমন কমিশনের(দুদক) পক্ষে আদালতে আবেদন দেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
একই হাইকোর্ট বেঞ্চ গতবছর ১৯ নভেম্বর পি কে হালদারের বিষয়ে স্বতপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও দেশ থেকে পালানো পিকে হালদারকে গ্রেপ্তার করতে বা দেশে ফেরাতে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা ১০ দিনের মধ্যে জানাতে স্বরাষ্ট্র সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়। ‘পি কে হালদারকে ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে দুদক’ শিরোনামে গত ১৮ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে এ আদেশ দেন আদালত। এ আদেশে দুদক গত ২ ডিসেম্বর আদালতকে জানায়, ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে ইন্টারপোল পিকে হালদারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এর আগে হাইকোর্ট গতবছর ২১ অক্টোবর এক আদেশে দেশের বিমানবন্দরে পা রাখা মাত্রই পিকে হালদারকে গ্রেপ্তার করতে নির্দেশ দেন।
এরইমধ্যে হাইকোর্ট দু’দফায় পিকে হালদার, তার মা, স্ত্রীসহ সংশ্লিস্ট ব্যক্তিদের পাসপোর্ট জব্দ, দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা, তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া পিকে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুদক।