×
  • প্রকাশিত : ২০২১-০১-৩১
  • ৮২৫ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
মার্কিন প্রতিষ্ঠান সিয়ার্সের বিরুদ্ধে করা ক্ষতিপূরণ মামলায় নিজেদের পক্ষে রায় পেয়েছেন বাংলাদেশি তৈরি পোশাক শিল্পের সরবরাহকারীদের একটি দল। করোনাভাইরাসের ফলে ব্যবসায়িক মন্দা, বকেয়া এবং দূর্নীতিমূলক আচরণের অভিযোগে করা এ মামলায় ৪ কোটি মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে বাংলাদেশি সরবরাহকারী দলটি।

মার্কিন কোন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এত বড় অংকের ক্ষতিপূরণ মামলায় জয়লাভ একটি বিরল ঘটনা।

শনিবার (৩০ জানুয়ারি) বিখ্যাত সাময়িকী ফোর্বস এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের জুনে বাংলাদেশি ২১ টি কোম্পানির পক্ষে মামলা দায়ের করেন জোসেফ ই স্যারাচেক।

মামলায় স্যারাচেক দাবি করেন, বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর সিয়ার্স প্রচুর পরিমাণ অব্যবহৃত কাপড় এবং পাওনা বড় অংকের অর্থ বকেয়া রেখে কোম্পানীগুলোর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। শুধু তাই নয়, সিয়ার্স কৌশলে কোম্পানীগুলোর বিল পরিশোধ না করার লক্ষ্যে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণার পরিকল্পনা করে।

রায় পক্ষে আসার প্রেক্ষিতে স্যারাচেক নিশ্চিত করেছেন, বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো ট্রান্সফর্মকোর মধ্যস্থতায় জরিমানাকৃত অর্থের বড় অংশ হাতে পেয়েছেন।

উল্লেক্ষ্য ট্রান্সফর্মকো মার্কিন বিলিওনিয়ার এডওয়ার্ড ল্যাম্পার্ট কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠান। গত বছর ট্রান্সফর্মকো নিজস্ব অর্থায়নে সিয়ার্স এবং কে-মার্ট কিনে নিয়ে দেউলিয়া হওয়া থেকে রক্ষা করে প্রতিষ্ঠান দুটিকে।

প্রতিবেদনে স্যারাচেক বলেন, ‘’বকেয়া অর্থের একটা বড় অংশ ফিরে পাওয়ায় কোম্পানিগুলো অত্যন্ত আনন্দিত’’

নির্ধারিত কাজ একাধিকবার সম্পন্ন করার পরও সিয়ার্স বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোর বকেয়া ফেরত দিতে অসমর্থ ছিল। সিয়ার্সের নিজের অর্থসংকট এবং পূর্বের বকেয়া পরিশোধে ব্যর্থতা বিষয়টিকে ত্বরান্বিত করায় ভূমিকা রেখেছে মারাত্মকভাবে।

ফোর্বসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কয়েকটি প্রতিষ্ঠান প্রায় ৬ কোটি ডলার মূল্যমানের পোশাক গত বছর সিয়ার্সের উদ্দেশ্যে তৈরি করে পাঠিয়েছে। কিন্ত প্রাথমিকভাবে নামেমাত্র অর্থ পরিশোধ করে সিয়ার্স চুক্তি বাস্তবায়ন করায় অনেক কোম্পানি প্রচন্ড অর্থনৈতিক চাপের মুখে পড়ে।

মামলায় জয়ের পর প্রায় ভংগুর কোম্পানিগুলো গত সেপ্টেম্বরে কিছু অর্থ ফেরৎ পেয়েছে এবং তাদের নিয়মিত বিরতিতে অর্থ প্রাপ্তি অব্যাহত রয়েছে।

কোম্পানি পক্ষের আইনজীবী আদালতে বলেন, ‘’সিয়ার্সের অর্ডার বাতিলকরণ বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় একধরনের মানবিক সংকট সৃষ্টিতে করেছে।‘’

শুধু সিয়ার্স নয় নামকরা ব্র্যান্ড যেমন ফরএভার ২১, রোজ ড্রেস ফর লেস, দ্যা চিল্ড্রেনস প্লেস, কোহল’স কেএসএস, গ্লোবাল ব্র্যান্ডস শপ, আর্কেডিয়ার মতো প্রতিষ্ঠান প্রায় ৪০০০ কোটি ডলার সমমূল্যের পোশাকের অর্ডার তৈরির পর মূল্য বকেয়া রাখে।

করোনাকালে এই বকেয়া অর্থ কিছু কোম্পানিকে প্রায় ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয় এবং অনেক কোম্পানি শ্রমিকের বেতন পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়।

অপরদিকে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে এইচএন্ডএম, পিভিএইচ, ভিএফ কর্পোরেশন, ভিএফসি, জারা এবং সিএ-এর মতো ২৪ টি বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান বকেয়া অর্থ পরিশোধ করেছে। করোনাভাইরাস আঘাত হানার আগে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২০০০ কোটি ডলার সমমূল্যের পোশাক রপ্তানি হয়েছে ।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat