×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৪-২৮
  • ৭০১ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে বাংলাদেশ গঠনের পর উত্তরপূর্ব ভারত লাভবান হয়েছেকেননা দেশের পশ্চিমাঞ্চল সীমান্ত বরাবর আমরা যে ধরনের উত্তেজনা দেখতে পাই, ওই ধরনের উত্তেজনাময় পরিবেশ বাংলাদেশ সীমান্তে কখনওই আমরা দেখতে পাই না। তার কারণ হল বাংলাদেশ আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র। একটা সময় এই সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের সমস্যা ছিল কিন্তু সেটাও এখন প্রায় নেই বললেই চলে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে এখন শান্তি ও স্থিতিশীলতা দুটোই বিরাজ করছে।

গত ২৩ এপ্রিল ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং আসামের রাজধানী গুয়াহাটিতে এই বক্তব্য প্রদান করেন।  ১৯৭১ সালের যুদ্ধে অতুলনীয় সেবা, ত্যাগ এবং সাহসিকতার জন্য রাজ্যটির বীর যোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি ভারত-বাংলাদেশ এর ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে স্মরণ করেন। উত্তর পূর্ব ভারতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম এখন অনেক কমে এসেছে আর তাই বর্তমান সরকার বিভিন্ন রাজ্য থেকে সেনাবাহিনীকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ারস অ্যাক্ট (আফস্পা) প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। সম্প্রতি আসামের ২৩ টি জেলা এবং মণিপুর ও নাগাল্যান্ডের ১৫ টি করে মোট ৩০ টি পুলিশ থানার অধীন এলাকা থেকেও ওই আইন তুলে নেওয়া হয়েছে। ওইসব অঞ্চলগুলিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে আসার কারণেই এই আইন প্রত্যাহার করা সম্ভব হয়েছে। পূর্বে মেঘালয়, অরুণাচলপ্রদেশ থেকেও ওই আইন প্রত্যাহার করা হয়েছিল। অর্থাৎ বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী বেশিরভাগ প্রদেশ থেকেই এই বিশেষ সেনা আইন প্রত্যাহার করেছে ভারত সরকার। এর আগেও বেশ কয়েকবার ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে সন্ত্রাসবাদে এই বিশেষ ভূমিকা পালন করার জন্য।

রাজনাথ সিং এর এই বক্তব্যের মাধ্যমে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমে সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। বাংলাদেশের সাথে ভারতের বর্তমান সম্পর্কের মাত্রা যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। সন্ত্রাসবাদ দমনে দুই দেশ একতাবদ্ধ হয়ে বর্তমানে কাজ করছে। তবে আজ থেকে এক যুগ আগে কিন্তু সম্পর্ক এমন ছিলো না। বিশেষ করে ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় আসার পর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক তলানীতে গিয়ে ঠেকে।  ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিগোষ্ঠীদের সাথে এক নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠে প্রধানমন্ত্রী পুত্র তারেক জিয়ার। তার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ২০০১- ২০০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রায় ২০টি  ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ক্যাম্প পরিচালিত হয়তারেক জিয়ার সহযোগিতা এবং পৃষ্ঠপোষকতায় যে এই ক্যাম্পগুলো পরিচালিত হতো তার প্রমাণ ভারতের কাছে রয়েছে। এমনকি ভারতের অনেক বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়া থেকে শুরু করে সার্বিক ব্যবস্থাপনা তারেক জিয়া করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। উলফাসহ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্ত্র সরবরাহের মতো ঘটনাও ঘটেছে বেগম জিয়ার শাসনামলেই। দশ ট্রাক অস্ত্র সরবরাহের মতো ঘটনা তারেক জিয়ার সরাসরি নির্দেশেই হয়েছিলো এবং বিএনপি সরকারের মন্ত্রীদের মাধ্যমেই তা ঘটতে যাচ্ছিলো। একটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আরেকটি রাষ্ট্রের গর্হিত কাজের মধ্যে এই দশ ট্রাক অস্ত্র সরবরাহের ঘটনা অন্যতম।

অনেক ঘটনাপ্রবাহের পর ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। শেখ হাসিনার সরকার সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করে। ভারত যেহেতু পার্শ্ববর্তী বন্ধু রাষ্ট্র তাই সীমান্ত সন্ত্রাস বন্ধে ভারতকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশ কিছু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেভারত সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং শেখ হাসিনার জঙ্গিবাদবিরোধী নীতি এই অঞ্চলে সন্ত্রাস দমনে একটা বড় ভূমিকা পালন করে। ভারত-বাংলাদেশ বন্দী বিনিময় চুক্তির কার্যকারিতা প্রত্যক্ষভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছিলো না , আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ভারত সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ২০১৫ সালে  বাংলাদেশের কারাগারে থাকা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার (ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম) শীর্ষ নেতা অনুপ চেটিয়াকে ভারতের কাছে প্রত্যর্পণ  করা হয়। এমন বেশ কিছু পদক্ষেপের পাশাপাশি ভারতের সাথে কিছু চুক্তি করে বাংলাদেশ। চোরাচালান, মাদক ও সন্ত্রাস ছিলো ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে আইন-শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে বড় সমস্যাএই চোরাকারবার ও সীমান্ত পারাপার রুখতে ২০১১ সালেই ভারত-বাংলাদেশ যৌথ সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (সিবিএমপি) স্মারক স্বাক্ষরসহ নানা কার্যক্রম হাতে নেয়।  সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানো ও ব্যবস্থাপনা মানসম্মত করার লক্ষ্যেই এই সিবিএমপি স্বাক্ষরিত হয়। সমন্বিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সীমান্তে মাদকসহ অন্যান্য অবৈধ দ্রব্যের চোরাচালান, নারী ও শিশু পাচার বন্ধসহ সীমান্ত নিরাপত্তা আরও জোরদার করার ব্যাপার বেশ কিছু নির্দেশনা ঐ চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়। কেননা সেভেন সিস্টার্স অঞ্চল সন্ত্রাসবাদের উর্বর ভূমি। আর এই সন্ত্রাসবাদ কোনো দেশের একক সমস্যা নয়, এটি বিশ্বব্যাপী বিরাজমান। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে মাদক পাচার, চোরাচালান, সংঘবদ্ধ অপরাধ ইত্যাদি। এসব সমস্যা কার্যকরভাবে মোকাবেলার জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা অত্যন্ত প্রয়োজন। বাংলাদেশ ও ভারত দ্বিপক্ষীয় ক্ষেত্রে ২০০৬ সাল থেকে নিরাপত্তা বিষয়ক আলোচ্য চুক্তিগুলো সম্পাদনের কার্যক্রম শুরু করে। নিরাপত্তা ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনা নিয়ে দুই দেশ যে কয়েকটা চুক্তি সম্পাদন করে তা সন্ত্রাস দমনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

অপরাধ দমন বিষয়ক পারস্পরিক আইনগত সহায়তা চুক্তিঃ এ চুক্তির আওতায় ফৌজদারি অপরাধ বিষয়ে সহযোগিতা ও পারস্পরিক আইনগত সহায়তার মাধ্যমে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পর্কিত অপরাধগুলো অনুসন্ধান, বিচারকার্য এবং অপরাধের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ ও দলিলপত্র শনাক্তকরণ, বাধাদান, জব্দকরণ বা বাজেয়াপ্তকরণের বিধান রাখা হয়েছে। চুক্তিভুক্ত দুটি পক্ষ এ চুক্তির আওতায় একে অপরকে ফৌজদারি অপরাধ বিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করবে। এই চুক্তির আওতায় আদালত বা অপর কোনো সংশ্লিষ্ট বিভাগ কর্তৃক সহায়তা চাওয়া হলে, অনুরূপ পারস্পরিক আইনগত সহযোগিতা প্রদান করা হবে। এ চুক্তি কার্যকর হওয়ার আগে সংঘটিত কোনো ফৌজদারি অপরাধ বিষয়ক অনুরোধের ক্ষেত্রেও এরূপ পারস্পরিক আইনগত সহযোগিতা প্রদান কার্যকর হবে। উভয় দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ হিসেবে চুক্তির আওতায় পারস্পরিক সহযোগিতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, সংঘটিত অপরাধ ও অবৈধ মাদক পাচার দমন বিষয়ক দ্বিপক্ষীয় চুক্তিঃ আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস ও মাদক পাচার সম্পর্কিত অপরাধসহ সব ধরনের অপরাধ প্রতিরোধ, অনুসন্ধান, বিচারকার্য কার্যকরভাবে সম্পাদনের জন্য গোয়েন্দা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে এ চুক্তিটি সই করা হয়। এ চুক্তির আওতায় চুক্তিভুক্ত উভয় দেশ অভ্যন্তরীণ আইন ও বিধি সাপেক্ষে, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস প্রতিরোধ, মাদকদ্রব্য এবং রাসায়নিক পদার্থসহ সাইকোট্রোপিক দ্রব্যগুলোর অবৈধ পাচার রোধে সহায়তা প্রদান করবে। অপরাধ অনুসন্ধান, বিচারকার্য ও দমনের উদ্দেশ্যে একে অপরকে পারস্পরিক আইনগত সহায়তা প্রদান করবে। উভয় দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে দেশগুলোর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত একটি সমন্বয় কমিটির মাধ্যমে সহায়তাদানের কার্যক্রম পরিচালিত হবে। তবে দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার স্বার্থ বিঘ্নিত হয় অথবা দেশের প্রচলিত আইন বা বিধি পরিপন্থী কোনো কার্যক্রম এই চুক্তির আওতায় করা যাবে না। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চুক্তিটির খসড়া অনুমোদনের ব্যাপারে ২০০৬ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার কাজ করছে।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের বিনিময় বিষয়ক চুক্তিঃ ফৌজদারি অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা যাতে নিজ দেশে সাজা ভোগ করতে পারে তার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে এ চুক্তি প্রণয়ন করা হয়। ছয় মাসের অধিক সাজা ভোগ করা বাকি আছে অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি যার বিরুদ্ধে অন্য কোনো মামলার বিচার বা তদন্ত বাকি নেই এমন ধরনের আসামিরা এই চুক্তির আওতায় বিবেচিত হবেন। তবে যারা কোনো সেনা আইনে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যারা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে অন্য কোনো মামলা বিচারাধীন আছে তাদের ক্ষেত্রে এই চুক্তির বিধান প্রযোজ্য হবে না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, নিজ দেশে সামাজিকভাবে স্থানান্তরের সুযোগ পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট আসামি কর্তৃক নিজে অথবা তার নিয়োজিত ব্যক্তি কর্তৃক লিখিতভাবে অনুরোধ করা ব্যতীত এ চুক্তির কোনো বিধান প্রযোজ্য হবে না। সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের নিজ দেশে স্থানান্তরের বিষয়ে ভারত একই ধরনের চুক্তি যুক্তরাজ্য, মিসর, মরিশাস, কানাডা, সৌদি আরব ও ফ্রান্সসহ প্রায় ১৬টি দেশের সঙ্গে সম্পাদন করেছে। আরও অনেক দেশের সঙ্গে সম্পাদনের অপেক্ষায় আছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চুক্তিটির খসড়ার ওপর ২০০৮ সাল থেকে কার্যক্রম চলছে।মূলত ভারত বাংলাদেশ সম্পর্ক এক নতুন মাত্রায় উন্নীত হয় ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর। এর আগে

ভারতের একটি প্রভাবশালী সাময়িকি মেইনস্ট্রীম উইকলিতে প্রকাশিত এক নিবন্ধে  অপরুপা ভট্টাচার্য এবং সৌরিনা বেজ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের সম্মুখীন করেন ভারতীয় কূটনীতিকসহ বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিশ্লেষকদের। প্রশ্নটি ছিলো "ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ: হোয়াট ইফ বিএনপি রিটার্নস।" অর্থাৎ যদি বিএনপি নির্বাচনে জিতে বাংলাদেশের ক্ষমতায় ফিরে আসে, তখন ভারত কী করবে? এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেয়া ডিপ্লোম্যাটিক টার্মে না পরলেও সরাসরি সেখানে অনেকে মত দিয়েছেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনা-প্রবাহ খুব ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণকারী, ভারতীয় লেখক-সাংবাদিক এস এন এম আবদী বলেন, এই মূহুর্তে বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতের পররাষ্ট্রনীতির প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনা। এটা ভারতীয় নীতির এক নম্বর প্রায়োরিটি।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে ভারতীয় যে কূটনীতিক সর্বদা বিশ্লেষণধর্মী বক্তব্য উপস্থাপন করেন তিনি হলেন পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী। ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হিসেবে ঢাকায় কর্মরত পিনাক রঞ্জন বলেন, ২০০২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত খালেদা জিয়া একটি দুর্নীতিপরায়ণ ও চাঁদাবাজ সরকারের প্রধান ছিলেন যেখানে তারেক রহমান ও তাঁর ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকো চাঁদাবাজির একটি সংঘবদ্ধ জোট এবং একটি সমান্তরাল সরকারব্যবস্থা চালিয়েছেন। এমনকি  উলফার জন্য পাকিস্তান থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে আসার ব্যবস্থা করার অভিযোগে খালেদা জিয়ার সরকার যে দায়ী সেটাও উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ পিনাক রঞ্জনের কথায় এটা স্পষ্ট, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় ভারতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিমূলক যেসব কাজ করেছিলো তা ভারতবাসী কেউই ভুলেনি। পাকিস্তান ও তারেক চক্রের সমর্থনে বেশ কিছু ইসলামি মৌলবাদী দল বিখ্যাত হয়ে ওঠে এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোকেও সমর্থন দেওয়া হয় তখন। তারেক রহমান এসব মৌলবাদীকে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। আর পাকিস্তান এদের ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। দশ ট্রাক অস্ত্র ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছে পাঠাচ্ছিলো তৎকালীন বিএনপি সরকার এবং তা ভারতের বিরুদ্ধে ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের অংশ ছিলো বলে ভারতের বর্তমান সরকারকে স্মরণ করিয়ে দেন পিনাক রঞ্জন।  ঠিক এই বক্তব্যগুলোই একটু ভিন্নভাবে গত ৯জুন ভারতের বিখ্যাত দ্য হিন্দু পত্রিকাতে পাবলিশ করা হয়। বিএনপির নেতা কর্মীদের ভারত সফর এবং তাদের আলোচনার বিষয় নিয়েই এই সংবাদ ছাপে দ্য হিন্দু। যেখানে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য উল্লেখের পাশেই খুব জোরালোভাবে বলা হয় ১৯৯১-১৯৯৬ ও  ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন হরকাতুল জিহাদের মতো সন্ত্রাসী সংগঠনের অভয়ারণ্য হয়েছিলো এই বাংলাদেশ যেখান থেকে ভারতের বিরুদ্ধে খুব সহজভাবেই কাজ চালিয়ে যেতো এসব সন্ত্রাসীরা। পত্রিকাটি  হরকাতুল জিহাদসহ সব  সন্ত্রাসী সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধে শেখ হাসিনা সরকারের অবদান উল্লেখ করে

মূলত সন্ত্রাস বন্ধে ভারত-বাংলাদেশ এক হয়ে কাজ করছে বলেই আজ সীমান্ত সন্ত্রাস অনেক কমে এসেছে। ভারতের উত্তর পূর্ব রাজ্যগুলোতে যে শান্তির সুবাতাস বইছে তা বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কারণেই। পূর্বের বিএনপি সরকারের ন্যায় আওয়ামী লীগ সরকার সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দেয়নি বরং আঞ্চলিক ও সীমান্ত সন্ত্রাস বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। ফলে সন্ত্রাস ও জঙ্গিমুক্ত হিসেবে গড়ে উঠেছে এই অঞ্চল।

লেখক- হাসান ইবনে হামিদ 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat