×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৫-১৭
  • ১৪৬২ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

চরম এক সংকটকাল অতিক্রম করছে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলংকা। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে এ দেশটি। ইতোমধ্যেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় সরকারের ব্যর্থতার জের ধরে শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভার সব সদস্য পদত্যাগ করেছেন। সরকারপ্রধান মাহিন্দা রাজাপক্ষে নিজেও লাগাতার সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। উত্তেজিত জনতা এমপি মন্ত্রীদেরকে হামলা করছে, একজন এমপি জনরোষের শিকার হয়েছেন এবং তাকে হত্যা করা হয়েছে। মন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতেও জনতা হামলা চালাচ্ছে। যতই দিন যাচ্ছে খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানিসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অভাব সেখানে প্রকট হয়ে উঠছে। মূলত বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র সংকট বেসামাল করে তুলেছে শ্রীলংকার অর্থনীতিকে। পরিস্থিতি এমন অবস্থায় ঠেকেছে যে তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি ব্যয়টুকুও মেটাতে পারছে না। ফলে জিনিসপত্রের আকাশছোঁয়া দামে দেশটিতে এখন শুধুই হাহাকার।  অবস্থা এতোটাই ভয়াবহ যে, কাগজ আমদানি করার মতো বৈদেশিক মুদ্রা না থাকায় সম্প্রতি কাগজের অভাবে দেশটির স্কুল পর্যায়ের পরীক্ষা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া জ্বালানী তেলের তীব্র সংকটে তেল সংগ্রহের জন্য লাইনে ভিড় করছে হাজার-হাজার মানুষ । পরিস্থিতি সামাল দিতে পেট্রোল পাম্পগুলোতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের পতনের পর নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন  রনিল বিক্রমাসিংহে। কিন্তু মন্ত্রীসভা গঠনে তিনিও হিমশিম খাচ্ছেন। এমন অবস্থা শ্রীলংকাকে বিশ্ব গণমাধ্যমের শিরোনামে নিয়ে এসেছে। কেন আজ শ্রীলংকার এই পরিণতি তা এখন বিশ্ব গণমাধ্যমের প্রধান আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

চীনের ডেট ট্র্যাপ ডিপ্লোমেসির শিকার হয়েছে শ্রীলংকা। চীনা ঋণ নিয়ে পরিশোধ করতে গিয়ে অর্থনৈতিক চাপে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি। শ্রীলঙ্কা সরকারের ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলারের বৈদেশিক ঋণের ১০ শতাংশ এসেছে চীন থেকে এবং এই ঋণের মাধ্যমে ডেট ট্র্যাপ ডিপ্লোমেসির জালে শ্রীলংকা নিজেদের জড়িয়েছে।  কেবলমাত্র শ্রীলংকার ক্ষেত্রেই যে এমন ঘটনা চীন করেছে তা কিন্তু নয় বরং এশিয়া ও ইউরোপের অনেক দেশ চীনের এই ঋণের ফাঁদে আটকা পড়েছে। কূটনীতির পরিভাষায় চীনের এ নীতিকে ডেট ট্র্যাপ ডিপ্লোমেসি বলা হলেও সরল ভাষায় আমরা একে বলছি চায়না ফাঁদ। বর্তমান পৃথিবীতে চায়না ফাঁদ শব্দটি এখন বহুল প্রচলিত। শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, পাকিস্তান, মালয়শিয়াসহ আফ্রিকার অনেক দেশ এই চায়না ফাঁদ এ আটকা পড়েছে। চীন তার বিশ্ব আধিপত্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রধানত মহাসড়ক, রেলপথ, গভীর সমুদ্রবন্দর, বিদ্যুৎ উৎপাদন প্ল্যান্ট, খনিজ আহরণ প্রকল্প ইত্যাদি ভৌত অবকাঠামোতে যে বিপুল ঋণ প্রদান করছে, তাতে বেশির ভাগ দেশ প্রলুব্ধ হয়ে এমন সব প্রকল্পে এ ঋণের অর্থ বিনিয়োগ করছে, যেগুলোর কোনো কোনোটি অর্থনৈতিকভাবে নড়বড়ে হওয়ায় প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার পর ওই সব প্রকল্পের আয় থেকে সুদসহ চীনের ঋণ পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। এভাবেই চীনা ঋণের ফাঁদে আটকা পড়ে ওই প্রকল্পগুলোর দীর্ঘমেয়াদি কর্তৃত্ব চীনের হাতে ছেড়ে দিচ্ছে অথবা চীনকে নিজেদের সার্বভৌমত্ববিরোধী নানা সুবিধা দিতে বাধ্য হচ্ছে। কেউবা রাজনৈতিকভাবে, কেউ ঋণ নিয়ে আবার কেউ চীনের সরাসরি আগ্রাসনের শিকার। অনেক রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি চায়না ফাঁদের শিকার হয়েছে, অতীতে চীন সরকারের কাছ থেকে নেয়া ঋণের বোঝার কারণে। চীন খুব চমৎকারভাবে উচ্চভিলাষী প্রকল্প বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে সক্ষম। এমনকি বৈশ্বিক উপযোগিতার বিষয়টিও চায়না তার টার্গেট গ্রুপের কাছে সফলভাবে তুলে ধরতে পারে। চীনের এই নীতির কারণেই তারা গোটা বিশ্বে ব্যবসা-বাণিজ্য বিস্তার ঘটিয়েছে এবং পরবর্তী পর্যায়ে সেখানে সামরিক শক্তি সরঞ্জামের উপস্থিতি ঘটাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এসব দেশ চীনকে আগ্রাসী মনে না করলেও পরবর্তীতে কী হতে পারে তার ফলাফল ভোগ করছে পাকিস্তান, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ মিয়ানমারসহ আফ্রিকার অনেক দেশ, যারা নিজেদের ভূখন্ডে চীনের অর্থনৈতিক ও সামরিক আধিপত্য মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে।

শ্রীলংকার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি উদাহরণ দেয়া যায়, শ্রীলঙ্কার দক্ষিণাঞ্চলীয় হামবানটোটা জেলায় প্রভাবশালী রাজাপক্ষ পরিবারের নিবাস। সেখানেই চীনা ঋণে বানানো হয়েছে গভীর সমুদ্রবন্দর। ওই বন্দরের আয় দিয়ে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হয়ে উঠবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু বন্দর নির্মাণের ১৪০ কোটি ডলারের চীনা ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় ৬ বছরে ৩০ কোটি ডলার হারিয়েছে। পরে বাধ্য হয়ে ২০১৭ সালে বন্দরটি একটি চীনা রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির কাছে ৯৯ বছরের জন্য ইজারা দেয় শ্রীলঙ্কা। এর ফলে চীনা অর্থে নির্মিত বন্দর শেষ পর্যন্ত চীনের হাতে চলে যায়। শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা নৌবন্দর চীনকে ইজারা দেওয়া যে বড় ভুল ছিলো তা সাম্প্রতিক সময়ে এক বক্তব্যে বলেন শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে।

চীনের কাছ থেকে দেড় কোটি ডলার ঋণ নিয়ে একটি সম্মেলেনকেন্দ্র বানিয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকার। সেটিও অব্যবহৃত পড়ে রয়েছে। হামবানটোটা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে ২০ কোটি ডলারের চীনা ঋণে বানানো হয়েছে রাজাপক্ষে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। তবে বিমানবন্দরটি এখন বিদ্যুৎবিল পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে।

আবার রাজধানী কলম্বোর পাশে ৬৬৫ একর জায়গায় দুবাইয়ের আদলে বিলাসবহুল কৃত্রিম শহর গড়ছে শ্রীলঙ্কা। এ প্রকল্পেও অর্থায়ন করেছে চীন। তবে আশঙ্কা, এই প্রকল্পও চীনা ঋণের ফাঁদে পড়তে যাচ্ছে।

চীনের ঋণ নিয়ে সেই ঋণের জালে আটকা পড়া দেশের সংখ্যা কেবল বেড়েই চলছে। চায়না ফাঁদের আরেক নাম সিল্ক রোড। চীন পৃথিবীর প্রায় ৭০টি দেশকে এই সিল্ক রোড যুক্ত করতে যাচ্ছে। এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের অনেকগুলো দেশ সংযুক্ত হবে এই নেটওয়ার্কে। সংযুক্ত দেশগুলোর জনসংখ্যা পুরো পৃথিবীর অর্ধেক। দেশগুলোর সম্মিলিত জিডিপি পৃথিবীর চার ভাগের এক ভাগ। চীন সরকারের পক্ষ থেকে ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে, এই প্রকল্প গোটা বিশ্বকে এক বেল্টে এনে দাঁড় করাবে। কিন্তু বাস্তবতা কি বলছে? বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পের পাঁচ বছর পর এসে প্রশ্ন উঠছেএটি কি উন্নয়নের পথ, নাকি ঋণের ফাঁদ? চীন এই প্রকল্প দিয়ে অন্যান্য দেশগুলোর উপকার করতে চাইছে, নাকি গলায় পরাতে চাইছে ফাঁস? বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে যুক্ত হতে ২০ বিলিয়ন ডলারের উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালনা করতে হবে। আবার সেই কাজ করবে চীনা কোম্পানি, শ্রমিকও থাকবে চীনা। অর্থাৎ বেল্টের সাথে যুক্ত হওয়া রাষ্ট্রের নাগরিকের সেখানে কর্মসংস্থান হচ্ছে না মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, পাকিস্তানসহ অনেক দেশের দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যায়, ঋণের ফাঁদে ফেলে সংশ্লিষ্ট এলাকার আঞ্চলিক রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে চীন বলে রাখা দরকার, সিল্ক রোডে বাংলাদেশ যুক্ত হলেও এখন পর্যন্ত চীনের সরাসরি  হস্তক্ষেপের বাইরে রয়েছে বাংলাদেশ

মালদ্বীপ এই প্রকল্পে যুক্ত হতে গিয়েই চীনা ঋণে আটকে গেছে। আর সেই সুযোগে মালদ্বীপের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলানোর চেষ্টা করছে চীন। সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনের নেতৃত্বাধীন সরকারকে সমর্থন দিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতে যান কথিত ভারতপন্থী ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ। এদিকে বেইজিং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য মালদ্বীপকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। ২০১৩ সাল থেকে দেশটিকে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে চীন। নতুন প্রেসিডেন্টের চীনা নীতি পছন্দ না হলেও বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে আগের দেয়া এই বিশাল অংকের ঋণই যথেষ্টআর চীন সুযোগ বুঝে মালদ্বীপের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এখন ভালোভাবেই প্রভাব কাটাতে চাইছে।

আর অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত পাকিস্তান তো ২০১৩ সাল থেকে চীনের তৈরি সিল্ক রোডেই দেখছে মুক্তির পথ! তবে কিছুটা হুঁশ ফিরেছিলো ইমরান খান ক্ষমতায় আসার পর। ইমরান  সরকারের দাবি ছিলো, শি জিনপিংয়ের সঙ্গে নওয়াজের আমলে হওয়া বেশিরভাগ চুক্তিই অর্থহীন এবং চীনের পক্ষে গেছে। মারাত্মক রকমের ব্যয়বহুল তো বটেই। চীনের প্রস্তাবিত সিল্ক রোডের অনুদান নিয়েও তাই কোনো রকম ঝুঁকির পথে হাঁটতে নারাজ ইসলামাবাদ। সাবেক পাকনীতি ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী খুশরো বখতিয়ারের সরাসরি জানিয়েছেন, তারা কোনো বিশেষ মডেলের কথা ভাবছেন, যাতে পাক সরকারকে ফের কোনো ঋণের ধাক্কা সামলাতে না হয়। সম্প্রতি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে চীনের এ প্রকল্পে পাকিস্তান, শ্রীলংকা, কম্বোডিয়া, মালদ্বীপের মতো অন্তত ১৬ দেশ বেইজিংয়ের থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নিয়ে বসে আছে। কিন্তু পাকিস্তানের পক্ষে যে এই ঋণ শোধ করা সম্ভব নয়, সেটি ভালোই বুঝেছেন ইমরান। তাই প্রকল্প নিয়ে পুনর্ভাবনা শুরু করেছেন। আবার প্রকল্প থেকে বেড়িয়েও আসতে পারছেন না কেননা চীনের অনেক প্রকল্প পাকিস্তানে চলমান আর অনেক দিনের বন্ধুরাষ্ট্র বলে চীনকে চটাতেও চাইছে না। তবে বিকল্প কি পথ আছে সে দিকেই হাঁটতে চাইছে পাকিস্তান।  তবে  ইমরান সরকারের পতনের পর নতুন সরকার আগের নীতিতে হাঁটবে কিনা তা সময়ই বলে দেবে।

অপরদিকে মালয়েশিয়াও আছে বিপাকে। নাজিব রাজাকের সরকার চীনের বিভিন্ন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে মুক্ত হস্তে অনুমোদন দিয়েছিল। কিন্তু মাহাথির মোহাম্মদের সরকার এসে তা আটকে দিয়েছিলো। তবে চীনকে না করে দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা দোটানায় আছে মালয়েশিয়া। সম্প্রতি দেশটির এক মন্ত্রী বলে দিয়েছিলেন, উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়া হবে। আবার প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন,  এর ব্যয় বহন করার সাধ্য নেই তাঁর দেশের তবে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। অর্থাৎ অনেকক্ষেত্রে রাজনৈতিক অঙ্গনে চীন পিছু হটলেও, ঋণের কারণে চীনকে অগ্রাহ্য করতে পারছে না কেউই।

চীন হল শ্রীলঙ্কার বৃহত্তম ঋণদাতাআর এই দ্বীপ রাষ্ট্রের মোট ঋণের ১০ শতাংশ এসেছে কমিউনিস্ট দেশটির কাছ থেকে। শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে চীনের পরেই রয়েছে জাপান এবং ভারত। আর এই ঋণে ভারসাম্য না-থাকার কারণেই সঙ্কট মারাত্মক আকার নিয়েছে। সমস্যা মেটানোর জন্য বিদেশি সাহায্য চাইতে বাধ্য হয়েছে শ্রীলঙ্কা। এর ফলে চীনের উপর দেশটির নির্ভরতা বেড়েছে, যার কারণে ঋণের বোঝাও পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। আর পরিস্থিতিও খারাপ থেকে খারাপতর হয়েছে। সমুদ্র বন্দর, বিমানবন্দর-সহ নানা পরিকাঠামোগত প্রকল্পের জন্য সেই ২০০৫ সাল থেকে বেজিংয়ের সাহায্য নিয়ে আসছে শ্রীলঙ্কা। যদিও এই সব প্রকল্প থেকে কোনও লাভই ঘরে তোলা যায়নি। চীনের কাছে শ্রীলঙ্কার মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮০০ কোটি ডলার, যা তার মোট বৈদেশিক ঋণ ৪৫০০ কোটি ডলারের প্রায় ৬ ভাগের ১ ভাগ। এই বছরের জন্য শ্রীলঙ্কার থেকে চীনের পাওনা প্রায় ১৫০ কোটি থেকে ২০০ কোটি ডলার। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঋণ পুনর্নির্ধারণ ও ২৫০ কোটি ডলার সহায়তা দেওয়ার জন্য শ্রীলঙ্কা চায়নাকে অনুরোধ করেছিলো কিন্তু চীন এই ব্যাপারে কোন সহায়তার ব্যাপারে মুখ খুলেনি।

পৃথিবীর অনেক দেশ নানামুখী বড়  প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চীনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে বড়সড় অর্থনৈতিক ধাক্কা খেয়েছে। শ্রীলংকার পরিণতি তো আমাদের সামনেই। চীন ডলার সংশ্লিষ্ট নীতিমালায় ঋণ দেয়। আদতে আর্থিক ঋণ না দিয়ে তারা ট্রাক্টর, কয়লা, প্রকৌশলগত সহযোগিতা আর এ রকম কিছু জিনিস দেয়। কিন্তু ঋণ পরিশোধের সময় চীন সেটা মুদ্রায় ফেরত চায়। তাই চীনের মহাপ্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দেওয়া ঋণের ব্যাপারে আরো স্বচ্ছতা আনা দরকার। কেননা এটা কোন বিনা মূল্যের খাবার নয়। এটা এমন এক জিনিস, যেখানে প্রত্যেকে পিষ্ট হয় এবং হচ্ছে। শ্রীলংকা আরেকবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো।

লেখক- হাসান ইবনে হামিদ

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat