×
  • প্রকাশিত : ২০২১-১০-২৫
  • ১০০৯ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং ধর্মকেন্দ্রিক সহিংসতার ইতিহাস এই উপমহাদেশে বেশ পুরোনো আমরা বরাবরই দেখে এসেছি ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতনের মাধ্যমে একদলকে ফায়দা লুটতে ব্রিটিশ থেকে পাকিস্তান শাসনামল অতঃপর মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আজকের বাংলাদেশ, সর্বত্রই আমরা এই ধর্মীয় উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদের অস্তিত্ব দেখি। এই উপমহাদেশের মানুষের মাঝে ধর্ম কর্ম যেটুকুই থাকুক তার চাইতে ঢের বেশি ধর্মীয় অনুভূতি, এটা এতোই তীব্র যে সব জ্বলে পুড়ে ছাড়খার হলেও তাদের অনুভূতি থেকে তারা বিন্দুমাত্র পিছপা হন না। উপমহাদেশের মানুষের পরনে কাপড় থাক আর না থাক, পেটে ভাত থাক আর না থাক, একটি অনুভূতি এখানে প্রবল তা হলো ধর্মীয় অনুভূতি। এই ভূখণ্ডের মানুষের ধর্মানুভূতি এতোটাই স্পর্শকাতর যে, কোন ইস্যু দরকার পরেনা তাদের ধর্মানুভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হতে, কোন কারণ লাগেনা ভিন্নধর্মের মানুষের প্রতি ক্ষুব্ধ হতে। এ এক আজব অনুভূতি যে অনুভূতির বেড়াজালে আটকে আছে ভারত বাংলাদেশ পাকিস্তানসহ এই ভারতীয় উপমহাদেশ। আর এই সোশাল মিডিয়ার যুগে এসে তো একের পর এক গুজব রটিয়ে সাম্প্রদায়িক হামলা চালানো হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে এমন কিছু ঘটনার সাক্ষী হয়েছে ভারত-বাংলাদেশ

একটু পেছন থেকেই শুরু করা যাক, সময়টা ১৮৫৭। ব্রিটিশ সরকারের রাজ চলছে। ১৮৫৩ সালে তৈরি .৫৫৭ ক্যালিবার এনফিল্ড(পি/৫৩) রাইফেল ব্রিটিশরা এদেশে নিয়ে আসেএই রাইফেলের ব্যবহৃত কার্তুজে চর্বিযুক্ত অংশ ছিলো, যা লোড করার পূর্বে সৈন্যকে তা দাঁত দিয়ে ভেঙ্গে ফেলতে হত। গুজব রটানো হলো এই চর্বিযুক্ত অংশ গরু এবং শুকরের চর্বি দিয়ে তৈরি। এই গুজবের মধ্য দিয়ে জন্ম নেয় ১৮৫৭৫৮ সালে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে উত্তর এবং মধ্য ভারতে বিদ্রোহের ভারতীয় মহাবিদ্রোহ যা সিপাহী বিদ্রোহ নামে পরিচিত যেহেতু গরু ও শুকরের চর্বি মুখে দেওয়া হিন্দু এবং মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের সৈন্যদের কাছে অধার্মিক কাজ ছিল। ১৮৫৭ সালে সিপাহীরা (ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে ভারতীয় সৈন্য) নতুন কার্তুজ ব্যবহার করতে অস্বীকার জানায়। এ নিয়ে ধীরে ধীরে উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করে এবং শুরু হয় সিপাহী বিদ্রোহ যদিও ব্রিটিশ সরকার পরে তা কঠোর হস্তে দমন করে। এই বিদ্রোহের উদ্দেশ্য হয়তো ব্রিটিশদের বিতাড়িত করাই ছিলো কিন্তু পন্থাটা ছিলো চরম সাম্প্রদায়িক। এই পথ কেন বেছে নেয়া হয়েছিলো, এর কারণ হিসেবে দেখা হয় উপমহাদেশের মানুষের পালস। বিদ্রোহীরা জানতো, এই অঞ্চলের মানুষকে কেবল ধর্ম উস্কানি দিয়েই মাঠে নামানো যায়। ফলে সে পথেই হেঁটেছিলো বিদ্রোহীরা। তারা সর্ট কার্ট রাস্তা ধরে ধর্মানুভূতির গুজব ছড়িয়ে নগদ মুনাফা আদায় করেছিলো

ব্রিটিশ শাসন আমলের শেষের দিকে একের পর এক ধর্মীয় দাঙ্গায় আক্রান্ত হতে থাকে উপমহাদেশ। এই হামলাগুলোতে পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছিলেন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ। ধর্মীয় মানচিত্রে যেনো উপমহাদেশ বিশেষ করে ভারত-পাকিস্তানকে ভাগ করা যায় সে চেষ্টা থেকেই এতোকিছু। অবশেষে হলোও তাই, ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হলো ভারত পাকিস্তান। ধর্মের ভিত্তিতে ভাগের পর সাম্প্রদায়িক সহিংসতা কিন্তু আরো বেশি মাথাছাড়া দিয়ে ওঠে এবং ধর্মের ভিত্তিতে রাষ্ট্র ভাগ যে একটা অপরিণত, ভুল সিদ্ধান্ত ছিলো তা দ্রুতই সবার সামনে প্রকাশ পেতে থাকে, যার সর্বশেষ ধাপটা ছিলো পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের আলাদা হওয়া। মুসলমান-মুসলমান ভাই ভাই বলে গান গাওয়া পশ্চিম পাকিস্তান তখন হিন্দু মুসলিম বিবেচনা না করে অকথ্য নির্যাতন চালায় এবং ইতিহাসের অনিবার্য পরিণতি হিসেবে জন্মলাভ করে বাংলাদেশ। কিন্তু থেমে নেই ধর্মাশ্রিত সহিংসতা। আমরা যদি আদি সময় থেকে হিসেব করি তবে বেশ কিছু ধর্মীয় সহিংসতা মোটাদাগে আমাদের সামনে চলে আসে। এই উপমহাদেশীয় ভূখণ্ডে বার বার ধর্মীয় অনুভূতির ব্যাপারটি পুঁজি করে হাজারো মানুষের হত্যাযজ্ঞ হয়ে এসেছে যুগে যুগে । ১৮৮২-তে তামিলনাড়ু, ১৯২১-এ মাপ্পিতা, ১৯২৭ এ নাগপুর, ১৯৪৭এ পুরো ভারত বর্ষে, ১৯৬৭ তে রাঁচি, ১৯৬৯-এ গুজরাট, ১৯৮০ মোরাদাবাদ, ১৯৮৩ নেলি, ১৯৮৪-তে ভিউয়ান্দি, ১৯৮৫-তে গুজরাট, ১৯৮৭-তে মীরুৎ, ১৯৮৯-তে ভাগলপুর, ১৯৯০-তে হায়দ্রাবাদ, ১৯৯২-তে বোম্বে, ১৯৯৩ পাঙ্গাল ম্যাসাকার, ২০০২-তে গুজরাট, ২০০৬-তে ভাদোদারা, ২০১৩-তে পশ্চিমবঙ্গ, ২০১৩-তে মুজাফফরনাগার, ২০১৪ বোরোল্যান্ডপ্রত্যেকটি ঘটনাই ছিলো হিন্দু মুসলিমদের মধ্যে,  এক্ষেত্রে কিছু দাঙ্গা আবার কিছু চরম পর্যায়ের হত্যা-ধ্বংসযজ্ঞ। এতে কিন্তু কোন ধর্ম লাভবান হয়নি বরং প্রত্যেকটি সংঘর্ষই সংগঠিত হয়েছে রাজনৈতিক বা ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে। এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যক্তি বা রাজনৈতিক দল লাভবান হয়েছে।

বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক হামলার সবচেয়ে বড় ঘটনার সূত্রপাত ১৯৯০ সালে অক্টোবরের শেষে এবং নভেম্বরের প্রথম দিকেভারতের অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ধ্বংস করার খবরে এই দেশে শুরু হয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর সহিংসতা।  হিন্দুদের উপর ৩০ অক্টোবর থেকে হামলা শুরু হয় এবং বিরতিহীন ভাবে ২ নভেম্বর পর্যন্ত তা চলতে থাকে। এছাড়া এই ঘটনার সূত্র ধরে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন মাত্রায় সমগ্র বংলাদেশ জুড়ে হিন্দুদের উপর বিরামহীন অত্যাচার, নির্যাতন, লুটপাট, হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণের মত জঘন্য নিষ্ঠুরতা চালানো হয়। বিশেষ করে ১৯৯২ সালের পুরোটা সময় ধরে এই বীভৎসতার মাত্রা ছিল বর্ণনাতীত।ঢাকা, চট্টগ্রাম, যশোর, নড়াইল, গাইবান্ধা, ময়মনসিংহ, সুনামগঞ্জসহ মোট ১৪টি জেলায় আক্রান্তের হার ছিলো ব্যাপক। ২০০১-২০০৬ সালে বিএনপি-জামাত সরকারের আমলে আবারো বেড়ে যায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন। নির্বাচনে জয়লাভ করে বিএনপি-জামাত নেতাকর্মীরা যশোরসহ বেশ কয়েক জায়গায় নির্বাচনে জয়ের রাতেই একের পর এক হিন্দু এলাকা আক্রমণ করে জ্বালিয়ে দেয়। সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের পেছনে বরাবরই রাজনীতি জড়িত। যেহেতু বিএনপি-জামাতকে কখনো হিন্দু সম্প্রদায় ভোট দেয়না তাই তাদের ওপর এই নির্যাতন চলে ২০০১-২০০৬ পর্যন্ত পুরোটা সময়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব রটিয়ে সাম্প্রদায়িক হামলা এখন একটা কমন ট্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে। ২০১২ সাল থেকে ২০২১ সাল এই নয় বছরে বাংলাদেশ যে কয়টা ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন প্রত্যক্ষ করেছে এর পেছনে রয়েছে গুজবের হাত। এবং এই গুজবগুলো রটেছে সোশাল মিডিয়া নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে ফেসবুকের মাধ্যমে।

২০১২ সালের ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বরে একদল উগ্রবাদী গুজব ছড়ায় যে, রামুর স্থানীয় এক বৌদ্ধ তরুণ ফেসবুকে ইসলামের অবমাননামূলক একটি ছবি পোস্ট করেছেন। এমন খবর বেশ দ্রুতই ছড়িয়ে পড়েছিলো। এই গুজবের সূত্র ধরে উগ্রবাদীরা বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর ওপর বর্বর হামলা চালায়। সেদিন রামু উপজেলার চৌমোহোনি মোড়ে একটি মিছিল ও সমাবেশ হয়েছিলো যেখানে স্থানীয় রাজনীতিবীদরা এই সমাবেশ ও হামলার নেতৃত্ব দেয়। উগ্রবাদীরা ১৯টির মতো বৌদ্ধ মন্দিরে আগুন দেয় এবং ৫০টিরও বেশি বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট চালান। এছাড়াও তারা কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল গ্রামের মুশুরিখোলা শ্মশানে আক্রমণ চালায় এবং খারুলিয়া গ্রামের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে হামলা চালায়। অথচ পরে দেখা যায়, ফেসবুকে পোস্ট করা ওই ছবিটি ফটোশপের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছিল। গুজবের মাধ্যমে মুহুর্তেই শেষ করে দেয়া হল চিরকাল যাবত নিজেদের মাঝে লালন করা বন্ধুত্ব ও সম্প্রীতিকে।

২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নাসিরনগরে চলে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর বর্বর নির্যাতন রসরাজ নামক এক হিন্দু যুবকের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ আনা হয়, এলাকায় ছড়িয়ে দেয়া হয় ফেসবুকে রসরাজ মুসলমানদের কাবা ঘরের সঙ্গে হিন্দুদের দেবতা শিবের একটি ছবি জুড়ে দিয়েছেন! এই খবর রটিয়ে প্রথম দিনই আটটি হিন্দু পাড়ায় অন্তত তিনশোটি বাড়ি-ঘর, মন্দির, দেব-দেবীর মূর্তি ভাংচুর করা হয়। ভাঙচুর হয় রসরাজের বাড়িও। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নভেম্বরের চার তারিখ আরেক দফা হামলা হয় নাসিরনগরের হিন্দুদের উপরে। অথচ পরে দেখা যায় যে রসরাজের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অবমাননার যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা। কেননা পেশায় জেলে রসরাজ ফেসবুক চালাতে জানেন না। পাসওয়ার্ড কাকে বলে সেনিয়েও তার কোন ধারনা নেই। এমনকি যে ফেসবুক পোষ্টকে ঘিরে এতো উত্তেজনা এতো সহিংসতা পরে আর সেই আইডি বা পোষ্টের অস্তিত্বও পাওয়া যায়নি। একইভাবে ২০১৭ সালে রংপুরের গঙ্গাছড়ায় হিন্দু যুবকের বিরুদ্ধে ভুয়া ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তুলে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করা হয়, হামলা করা হয় সাইদীকে চাঁদে দেখার গুজব রটিয়েও।

এবছর ১৩ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সংঘটিত হয়। ১৩ই অক্টোবর বুধবার দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিনে বাংলাদেশের কুমিল্লা শহরের নানুয়ার দীঘির উত্তরপাড় পূজামণ্ডপে সকালবেলা সেখানে রাখা একটি হনুমান মূর্তির হাটুর উপর ইসলাম ধর্মের ধর্মগ্রন্থ কুরআন রাখার খবর সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এই খবরকে কেন্দ্র করে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে উক্ত পূজামণ্ডপে হামলা করা হয়। হামলার সময় প্রতিমা, পূজামণ্ডপ ভাঙচুর ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মারধর করা হয়। কুমিল্লায় সহিংসতার পর হামলাকারীরা চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, চট্টগ্রামের বাঁশখালী, কক্সবাজারের পেকুয়াতে ও বান্দরবানের লামায় কেন্দ্রীয় মন্দিরে ভাঙচুর করে। কুরআন অবমাননার বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে কমপক্ষে ১৫টি জেলায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যমতে, একশোর অধিক মন্দির/মন্ডপে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে, নিহত হয়েছে ৬ জন এবং অসংখ্য হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর আগুনে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এই ঘটনাও পূর্ব পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ। পরবর্তীতে পুলিশের তদন্তে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পরে ইকবাল নামের এক ব্যক্তি মাজারের মসজিদ থেকে কোরআন শরিফ এনে এই মন্দিরে রাখে এবং তার সহযোগী আরো দুজন যারা খুব সকালে লাইভে এসে ফেসবুকে এই গুজব ছড়িয়ে দেশব্যাপী তান্ডব চালায়। এখনো তদন্ত চলমান, আমরা হয়তো শীঘ্রই এই অপরাধের পেছনে মূল কারিগর যারা তাদের ধরতে পারবো, তাদের শাস্তি আশা রাখি নিশ্চিত হবে।

একটি রক্তক্ষয়ী দাঙ্গার মধ্য দিয়ে ভূমিষ্ঠ হয়েছিলো দুটি রাষ্ট্র, পাকিস্তান আর ভারত, আর তারপর সৃষ্টি হলো বাংলাদেশের। যাদের আর কোন অনুভূতি থাকুক আর না থাকুক ধর্মীয় অনুভূতি প্রবল! এখানে সংঘাত ছড়াতে মন্দিরে রাতের অন্ধকারে গরুর মাংস ফেলে রাখা হয়, একই ভাবে মুসলিমদের মসজিদ প্রাঙ্গণে জবাই করে রাখা হয় শুকর ছানা, এখানে রাতের আঁধারে মুসলমানের হাত ধরে কোরআন যায় মন্দিরে! এখানে তথাকথিত ধর্মীয় অনুভূতির নামে রাম মারে রহিমকে, রহিম মারে রামকে। রাম কেন হঠাৎ শিবের মূর্তি বসাবে কাবার ছবির উপর আর রহিমই বা কেন রামের দেব-দেবতাকে নিকৃষ্ট ভাষায় গালিগালাজ করবে ফেইসবুকের পাতায়! ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায় এই প্রত্যেকটি ঘটনাই পূর্ব-পরিকল্পিত, ব্যক্তিগত ভাবে রাম-রহিম কেউই লাভবান হয়নি এহেন সাম্প্রদায়িক সহিংসতায়, লাভবান হয়েছে নির্দিষ্ট ব্যক্তি বিশেষ বা রাজনৈতিক দল। আর এই সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে আপনার আমার হাত ধরেই। যখনি গুজবকে হাতিয়ার হিসেবে নিয়ে ভিন্ন ধর্মের মানুষের ওপর হামলা করা হচ্ছে তখন আমরা সেই গুজবে কান দিচ্ছি, আমাদের মতো মানুষেরাই সেই হামলাকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সমর্থন দিচ্ছি। কিন্তু এভাবে আর কতো? আমরা যদি নিজেরা না জাগি, নিজেরা সচেতন না হই তবে এই হামলা চলতেই থাকবে। ভারত-বাংলাদেশ দুদেশই এই সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের শিকার হবে বারাংবার। তাই আমরা শান্তি চাই, ভারত-বাংলাদেশ যেহেতু ধর্ম কৃষ্টি কালচারে একে অপরের সাথে খুব বেশি সম্পর্কিত, তাই আমরা চাই আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সদ্ভাব যেনো বজায় থাকে, দুই দেশের সরকার যেনো এই হামলা রুখতে আরো বেশি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। 

লেখকঃ হাসান ইবনে হামিদ,

রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক। 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat