যা করবে ইউরোপীয় অনুসন্ধানী মিশন
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ বিধি অনুযায়ী, যে দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেই দেশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ও ইইউর সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ইইউর পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তানীতি বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ পর্যবেক্ষক মিশন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে প্রথম ধাপ হলো প্রাক-নির্বাচনী অনুসন্ধানী মিশন পাঠানো।
এই মিশন সফরে এসে প্রথমে দেখবে এ দেশে ইইউর নির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশন পাঠানোর সুপারিশ করা বাস্তবসম্মত কি না। পর্যবেক্ষক মিশন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করলে তা কিভাবে নির্বাচনে ভূমিকা রাখবে তা যাচাই করবে ওই মিশন। এসবের ভিত্তিতে মিশন ইইউর হাই রিপ্রেজেন্টেটিভের কাছে প্রতিবেদন ও সুপারিশ জমা দেবে।
ইইউর প্রাক-নির্বাচন অনুসন্ধানী মিশন স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে তাদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য সহায়ক কিছু শর্তও দিতে পারে। সংশ্লিষ্ট দেশের কর্তৃপক্ষকে সেই শর্তগুলো পূরণ করার প্রতিশ্রুতিও দিতে হয়।
প্রাক-পর্যবেক্ষক মিশন সম্ভাব্য পর্যবেক্ষক মিশনের কর্মকাণ্ড বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গেও বৈঠক করবে। এরপর পর্যবেক্ষক পাঠানোর আগে ইইউর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি হতে হবে।
মার্কিন প্রতিনিধিদল আসছে সোমবার
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলের আগামী সোমবার বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে। প্রতিনিধিদলে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লুও থাকবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বাংলাদেশের জন্য ভিসানীতি ঘোষণার পর উজরা জেয়ার নেতৃত্বে এই সফরকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে বাংলাদেশ। এই সফরে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখার ব্যাপারে বাইডেন প্রশাসনের প্রত্যাশা পুনর্ব্যক্ত করার কথা রয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি ঘোষণার পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশের অগ্রগতি এবং আগামী নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দল ও কর্তৃপক্ষের মনোভাব জানার চেষ্টা করবে যুক্তরাষ্ট্র।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পাশাপাশি শ্রম ইস্যুতে বাংলাদেশকে চাপে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। শিগগিরই শ্রম আইন সংশোধন হোক, যুক্তরাষ্ট্রের জোর প্রত্যাশা আছে। এই প্রত্যাশা পূরণ হলে এ মাসেই মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অর্থনৈতিক পরিবেশ, জ্বালানি ও প্রবৃদ্ধিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি হোসে ফার্নান্দেজের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফরে আসতে পারে।
ইইউর মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি আসছেন
কালের কণ্ঠ’র প্রশ্নের জবাবে ইইউর রাষ্ট্রদূত বলেন, মানবাধিকারবিষয়ক ইইউর বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোর আগামী ২৪ জুলাই বাংলাদেশ সফরে আসছেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, ইইউর ওই বিশেষ দূত রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করবেন। এ ছাড়া তিনি সরকার ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ইইউর বিশেষ দূতের ওই সফর মূলত রোহিঙ্গা সংকটকে গুরুত্ব দিয়ে আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তাঁর এই সফরের বিষয় নয়।
ভারতের সচিব আসছেন বৃহস্পতিবার
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (এশিয়া) সৌরভ কুমার আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা সফরে আসছেন। এই সফর নিয়েও বিভিন্ন মহলে আগ্রহ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব সৌরভ কুমার ঢাকায় পররাষ্ট্রসচিব ও বিমসটেক মহাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সফর শেষে তিনি শুক্রবার ঢাকা ছাড়বেন।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, যুক্তরাষ্ট্র তৎপর হওয়ায় বাংলাদেশে এবারের নির্বাচন ও নির্বাচনপূর্ব পরিস্থিতির দিকে সবাই দৃষ্টি রাখছে। এ কারণেই নির্বাচনের আগে বিদেশি জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বা উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সফর নিয়ে কূটনৈতিক মহলেও কৌতূহল আছে।