টেকনাফে পুলিশের গুলিতে নিহত সেনাবাহিনীর মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) আদালতে দাখিল করা হয়েছে।
রবিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করেন কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম।
তিনি জানান, সিনহা হত্যা মামলায় ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে রবিবার চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জন জেল-হাজতে এবং একজন পলাতক রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ শেষে মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে টেকনাফ শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা। এ ঘটনায় গত ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি করে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ নয়জন পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়।
পরে আদালত মামলাটির তদন্ত করার আদেশ দেয় র্যাবকে। গত ৬ আগস্ট প্রধান আসামি লিয়াকত আলী ও টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ পুলিশের সাত সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
পরবর্তীতে সিনহা হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার অভিযোগে পুলিশের দায়ের করা মামলার তিনজন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টের দায়িত্বরত আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এছাড়া একই অভিযোগে পরে গ্রেপ্তার করা হয় টেকনাফ থানা পুলিশের সাবেক সদস্য কনস্টেবল রুবেল শর্মাকেও।
গ্রেফতার ১৪ আসামিকে র্যাবের তদন্তকারী কর্মকর্তা বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এর মধ্যে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া ১২ জন আসামি আদালতে ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এদিকে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যার ঘটনায় তার বোনের দায়ের করা মামলাটি বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা চেয়ে গত ৪ অক্টোবর কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে লিয়াকতের আইনজীবী মাসুদ সালাহ উদ্দিন একটি রিভিউ আবেদন করেন। ওই দিন আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য ২০ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
কিন্তু শুনানির নির্ধারিত দিনে সিনহা হত্যার মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস অসুস্থতার কারণে আদালতে উপস্থিত থাকতে না পারায় পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয় ১০ নভেম্বর। এরপর ওই আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী মাসুদ সালাহ উদ্দিন অসুস্থ হয়ে পড়লে মামলাটির পূর্ণাঙ্গ শুনানির দিন আবারও পিছিয়ে ১৩ ডিসেম্বর ধার্য করে আদালত।
এ জাতীয় আরো খবর..